ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮৫ ভাগ মামলা করেছেন আ.লীগ নেতাকর্মীরা: সিজিএস
30 September 2021ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত ২১ মাসে হওয়া মামলার ৮৫ ভাগ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে করা ৬৬৮ মামলা পর্যবেক্ষণ করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে।
তারা জানায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মামলা করেছে ৭৬টি, যা মোট দায়েরকৃত মামলার ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর তিন বছর: একটি পর্যবেক্ষণমূলক ফলাফল’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মামলাগুলোর বেশিরভাগই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দ্বারা না হয়ে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা তাদের নেতাদের পক্ষ হয়ে করেন।
শুক্রবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ৩ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ৩ বছরে সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে এই আইনের ব্যবহার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সিজিএস ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮- এর অধীনে দায়ের করা মামলাগুলো চিহ্নিত করে নথিভুক্ত করছে। প্রকল্পটি ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। এই প্রকল্পে মুখ্য গবেষক হিসেবে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিজিএস ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৬৮ মামলার বিবরণ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। এই মামলাগুলোয় অভিযুক্তের সংখ্যা ১৫১৬, যার মধ্যে ১৪২ জন সাংবাদিক, ৩৫ জন শিক্ষক, ১৯৪ জন রাজনীতিবিদ, ৬৭ জন শিক্ষার্থী।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্তদের ২৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ সাংবাদিক। গ্রেপ্তার ৪৯৯ জনের মধ্যে ৪২ জন সাংবাদিক, ৫৫ জন রাজনীতিবিদ, ৩২ জন শিক্ষার্থী। এমনকি ১৮ বছরের কম বয়সী ১৩ জনকেও এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সিজিএসের পর্যবেক্ষণ বলছে, এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে ৭৪টি। এর মধ্যে ১৩টি মামলা করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও ৬১টি মামলা করেছে অন্যরা। মন্ত্রীদের মানহানির অভিযোগে ৪১টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ৪টি মামলা করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে, ৩৪টি মামলা করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
সিজিএস জানায়, এখন পর্যন্ত মাত্র ২টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। তাছাড়া আইন অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ না হলে সাইবার ট্রাইব্যুনালের অনুমোদন সাপেক্ষে আরও ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়। কিন্তু গত তিন বছর ধরে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করার পরেও অভিযুক্ত এখনও হেফাজতে আছে এবং বিচারের আগেই তারা কার্যকরভাবে শাস্তি ভোগ করছেন।
News Courtesy: