‘প্রতিটি দেশ চীনকে আমাদের মতো মূল্যায়ন করবে আশা করি না’
22 November 2022ওয়াশিংটন কোনো দেশকে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে পক্ষ বেছে নিতে বাধ্য করে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি বলেন, প্রতিটি দেশ আমাদের মতো চীনের একই সঠিক মূল্যায়ন করবে এমনটি আমরা আশা করি না।
সোমবার (২১ নভেম্বর) ঢাকায় একটি হোটেলে ‘বে অফ বেঙ্গল সংলাপ ২০২২’ অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাকে সুস্পষ্ট করে বলতে দিন। এটি কোনো দেশকে বেছে নিতে বাধ্য করার বিষয় নয়। এটি হচ্ছে তাদেরকে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া।’
হাস বলেন, এমনকি অন্যান্য অনেক দেশের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও চীনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বা জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক রয়েছে যা তারা বজায় রাখতে চায়। মার্কিন কূটনীতির ভিত্তি হচ্ছে পরস্পরের স্বার্থের জন্য অংশীদারিত্ব এবং সম্মান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন জলবায়ু থেকে কোভিড-১৯ পর্যন্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাসহ বৈশ্বিক অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সহজ কথায়, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে অবশ্যই অদূর ভবিষ্যতে পরস্পরের সাথে কাজ করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত চীন সম্পর্কে মার্কিন অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য জাতিসংঘে সাম্প্রতিককালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষণ উদ্ধৃত করেছেন। জো বাইডেন চীনের প্রসঙ্গে বলেছেন ‘আমরা শীতল যুদ্ধ চাই না।’
বাইডেন গত সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠক করেছেন এবং যোগাযোগ বজায় রাখতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিলঙ্কেনকে বেইজিং সফর করার পরামর্শ দিয়েছেন।
হাস মনে করেন, রাশিয়ার পদক্ষেপ উন্মুক্ত, আন্তঃসংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং সহিষ্ণু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে অত্যন্ত চাপের সম্মুখীন কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।
হাস বলেন, পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করলে অশান্তি শেষ হবে। (কিন্তু) যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে, ইউক্রেন শেষ হয়ে যাবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অন্যদিকে চীনই একমাত্র দেশ যার অভিপ্রায় আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার এবং ক্রমবর্ধমানভাবে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সামরিক এবং প্রযুক্তিগত শক্তির পুনর্গঠন করতে পারে।
মার্কিন দূত বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত খুঁজছে না বরং দায়িত্বের সাথে প্রতিযোগিতা পরিচালনা করতে চাইছে।
হাস, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, সংক্রামক রোগ, বা মূল্যস্ফীতি ছাড়াও আন্তঃসীমান্ত সমস্যার প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য সারা বিশ্বের জনগণের দুর্ভোগের বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এসব অভিন্ন চ্যালেঞ্জ ভূরাজনীতির জন্য গৌণ নয়। এগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার একেবারে মূলে রয়েছে এবং অবশ্যই সেভাবে বিবেচনা করা উচিত।
হাস বলেন, তার দেশ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কে বাংলাদেশের সাথে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও উন্মুক্ত, আন্তঃসংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং সহিষ্ণু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে ঢাকা ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করতে চায়।
রাষ্ট্রদূত এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন- এ অঞ্চলের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চল।
News Courtesy:
https://dhakamail.com/national/52178